হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে মালহামা (মহা যুদ্ধ) কি অতি সন্নিকটে ???

 হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে মালহামা ( মহা যুদ্ধ ) কি অতি সন্নিকটে???

এই সেই আর এস এস প্রধান মোহন ভাগবত, যার কারনে ২০৫০ সালের পূর্বেই শুরু হতে পারে হিন্দু মুসলিম মালহামা বা মহা যুদ্ধ। তিনি বাংলাদেশ, পাকিস্থান, আফগানিস্থান, শ্রীলংকা, মায়ানমার কে একত্র করে হিন্দু অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠা করতে চাই। অখন্ড ভারতের সংবিধান কেমন হবে তাও তিনি উল্লেখ করেছেন। নিচে তার সেই স্বপ্ন বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলো।

 


স্বাধীনতার প্লাটিনাম জুবিলি উদ্‌যাপনের প্রাক্কালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত ‘অখণ্ড ভারত’ গঠনের যে লক্ষ্যমাত্রা আরও একবার নতুন করে বেঁধে দিলেন, তা বাস্তবায়নের অর্থ বাংলাদেশের স্বাধীন সত্তার লোপ হওয়া। শুধু বাংলাদেশই নয়, স্বাধীন সার্বভৌম সত্তা হারাবে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কাও। স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে গত রোববার নাগপুরে এক অনুষ্ঠানে এই ‘লক্ষ্য’ পূরণ প্রসঙ্গে মোহন ভাগবত বলেছেন, ‘অখণ্ড ভারত গঠনের স্বপ্নপূরণের পথে ভয়ই একমাত্র বাধা। যেদিন এই ভয় কাটানো যাবে, সেদিনই অখণ্ড ভারত গড়া সম্ভব হবে।

সেই অখণ্ড ভারত হবে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’। তার চরিত্র ও সংবিধান কেমন হবে, সেই খসড়াও প্রকাশিত হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের দুই দিন আগে গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী কেন্দ্র বারানসিতে খসড়া সংবিধান প্রকাশ করেন শঙ্করাচার্য পরিষদের পীঠাধ্যক্ষ ও সভাপতি স্বামী আনন্দ স্বরূপ। এ সময় তিনি বলেন, অখণ্ড ভারতে বসবাসকারী মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের ভোটাধিকার থাকবে না। ভোটদানের অধিকার ছাড়া এই দুই সম্প্রদায়ের সবাই অন্যদের মতো সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার ভোগ করতে পারবেন। অখণ্ড ভারতের রাজধানী হবে বারানসি। নতুন ধর্ম সংসদও গড়ে তোলা হবে সেখানে।

তিনি বলেন, অখণ্ড ভারতের প্রত্যেককে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। খসড়া সংবিধানের প্রচ্ছদে অখণ্ড ভারতের যে মানচিত্র ছাপা হয়েছে, তাতে পশ্চিমে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান, পূর্বে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ এবং দক্ষিণে শ্রীলঙ্কার কোনো স্বকীয় অস্তিত্ব রাখা হয়নি। পাঁচটি দেশই ভারতের অন্তর্গত। একটি গৈরিক পতাকাও রাখা হয়েছে প্রচ্ছদে। সেটিই অখণ্ড ভারতের জাতীয় পতাকা হবে কি না, সে বিষয়টি অবশ্য স্পষ্ট করা হয়নি। তিনি বলেন, ভারতবর্ষ থেকে যেসব দেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, তাদের সবাইকে নিয়েই গঠিত হবে অখণ্ড ভারত, যা হবে হিন্দু রাষ্ট্র। স্বাধীনতার শতবর্ষে, অর্থাৎ ২০৪৭ সালে, সংঘ কোন লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায়, তা স্পষ্ট করে নাগপুরের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ওই সময়ের মধ্যেই অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন সাকার করতে হবে। তিনি বলেন, ‘একমাত্র বাধা হলো ভয়। ভয় কাটলেই লক্ষ্য পূরণ সম্ভব। নিজেই নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, যে দেশ এত বিশাল ছিল, তা কী করে এত কমে গেল? সংস্কৃত ব্যাকরণবিদের (পাণিনি) জন্মস্থান কেন ভারতের অন্তর্গত নয়? ভারতের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। সিন্ধু–সরস্বতী সভ্যতার বয়স ব্রিটিশ ঐতিহাসিকদের মতে সাড়ে তিন হাজার বছর। কিন্তু সেই সভ্যতার প্রকৃত বয়স ৯ হাজার বছর। সেই সভ্যতা ছিল সর্বগামী। তার ব্যাপ্তি ছিল সর্বত্র।’

অখণ্ড ভারত গঠনের এই সংকল্পের কথা মোহন ভাগবত বেশ কিছুদিন ধরেই বলে চলেছেন। বিজেপির চালিকা শক্তি আরএসএস প্রধান একই কথা বলেছিলেন গত ৭ আগস্ট, নাগপুরে বহু প্রচারিত মারাঠা দৈনিক লোকমত–এর এক অনুষ্ঠানে। চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল হরিদ্বারে হিন্দুত্ববাদীদের এক সম্মেলনেও অখণ্ড ভারত গড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘দেশের জন্য এক হয়ে আমরা সবাই যদি বাঁচতে ও মরতে শিখি, তা হলে অতিদ্রুত এই লক্ষ্য পূর্ণ হবে। এখন যে গতিতে চলছি, তাতে আর একটু গতি সঞ্চারিত হলে ২০–২৫ বছরের মধ্যে স্বপ্ন সফল হবে। আরও একটু বাড়তি গতিতে চললে অর্ধেক সময় কমে যাবে।আরএসএসের ‘অখণ্ড ভারত’ ও সনাতন ধর্মগুরুদের ‘হিন্দু রাষ্ট্র’, সেই রাষ্ট্রের প্রস্তাবিত নতুন সংবিধান, তার খসড়া, মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের ভোটাধিকার না থাকা ইত্যাদি বিষয়ে শাসক বিজেপির শীর্ষ নেতারা আশ্চর্যজনকভাবে নীরব। কেন্দ্রীয় বা রাজ্য পর্যায়ের কোনো নেতাই মোহন ভাগবত বা আনন্দ স্বরূপের বক্তব্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। হায়দরাবাদের এআইএমআইএম নেতা ও সংসদ সদস্য আসাউদ্দিন ওয়েইসি অবশ্য টিপ্পনী কেটে বলেছেন, চীন ও পাকিস্তানের কবজা থেকে আগে হৃত জমি উদ্ধার করে দেখাক, তারপর না হয় অখণ্ড ভারতের কথা ভাবা যাবে।


আসাউদ্দিন ওয়েইসির সাথে তাল মিলিয়ে আমিও বলতে চাই, আগে ভারতের ভিতরে যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে সেটি একত্র করুন। তারপর অন্য দেশকে একত্র করার চিন্তা করবেন। আমি ধারনা করছি এই আগুনে হাত দিলে সম্পূর্ন ভারত ছিন্ন-ভিচ্ছিন হয়ে যাবে।

কোন মন্তব্য নেই

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.