যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে নতুনত্ব, যুদ্ধে নামবে ৭ হাজার রোবট সেনা
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে নতুনত্ব, যুদ্ধে নামবে ৭ হাজার রোবট সেনা
প্রযুক্তির বিকাশ ও অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীতেও নতুনত্ব আনছে। সেনাবাহিনীতে পৃথক রোবট সেনা আনছে দেশটি। পাঁচ বছর পর মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবে সাত হাজার রোবট সেনা। যুক্তরাষ্ট্রের পৃথক রোবট সেনাবাহিনী বানানো নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
সামনের দিনগুলোতে মানুষের বিরুদ্ধে ৭ হাজার রোবট সেনা যুদ্ধের মাঠে নামানোর পরিকল্পনা করছে সামরিক শক্তিধর যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে কয়েকশ’ রোবট বানিয়ে ফেলেছে দেশটি। সরাসরি সম্মুখযুদ্ধের পাশাপাশি যুদ্ধক্ষেত্রে এ রোবট সেনা তথ্য সংগ্রহ, নির্দেশনা, নিয়ন্ত্রণ ও সহযোগিতামূলক বিভিন্ন কাজও করতে সক্ষম হবে।
এসব রোবট রাসায়নিক অস্ত্র ও ভারি সরঞ্জাম বহন ও মানুষ হত্যায় একজন সাধারণ সেনার থেকে হাজারগুণ বেশি দক্ষ। আগামী ৫ বছরের মধ্যে সেনাবাহিনীতে পৃথক রোবট শাখা গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র এসব রোবট বা যন্ত্রসেনা নির্মাণে ১০০ কোটি ডলার খরচ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্রজেক্ট ম্যানেজার ব্রায়ান ম্যাকভেগ বলেন, ইতোমধ্যে গত দেড় বছরে ৮শ’ রোবট তৈরি করা হয়েছে।
আগামী ৫ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সব বিভাগেই রোবট কাজ করবে। স্বল্প ভারি, মধ্যম ও ভারি- এ তিন প্রজাতির রোবট নির্মাণ করছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। গত এপ্রিলে ভারি আকারের রোবট নির্মাণের জন্য ম্যাসাচুচেস্টের ইনডিউভর রোবোটিকস অব ছেলমসফোর্ড ও মাত্র ২৫ পাউন্ডের কম ওজনের রোবট নির্মাণে ওয়ালথামভিত্তিক কিউনেটিক নর্থ আমেরিকা কোম্পানির সঙ্গে ৪২ কোটি ৯১ লাখ ডলার মূল্যের চুক্তি করে মার্কিন সেনাবাহিনী।
গত অক্টোবরে ইনডিউভর কোম্পানির সঙ্গে ১,২০০ মধ্যম আকারের রোবট বানানোর চুক্তি করে সেনাবাহিনী। চলতি বছরের মধ্যে ভারি আকারের রোবট বানানোর কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে পেন্টাগনের। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ বলছে, ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধে এসব রোবট সেনা মোতায়েন করা হবে। সরাসরি সম্মুখযুদ্ধে এসব সেনা মানুষ হত্যাসহ নিজেদের আত্মরক্ষায় বেশ পটু। স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের দিকে ধেয়ে আসা বিপদকে প্রতিহত করতে পারবে এসব রোবট।
যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের পদক্ষেপের সমালোচনা করা হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, এতে দেশটির সেনাবাহিনীতে মানুষের চাকরি হ্রাস পাবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাশুল দিতে হবে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েক হাজার সদস্যকে। যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মানব সেনা হ্রাসের বিষয়টি শক্তিধর সামরিক দেশের মর্যাদা হ্রাসের সাথে তুলনা করছেন অনেক বিশ্লেষক।
সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির পল বলেন, রোবট সেনা যুদ্ধে নিধনযজ্ঞে মেতে ওঠার আগে নীতি বা নৈতিকতার বিষয়টি উপলব্ধির সুযোগ নেই। গত বছর শতাধিক প্রযুক্তিবিদ জাতিসঙ্ঘের কাছে এ ধরনের রোবটিক অস্ত্র তৈরি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি দেন। কারণ এ ধরনের অস্ত্র সন্ত্রাসীরা নিরস্ত্র ও নিরীহ মানুষের ওপর ব্যবহার করলে ফল হবে ভয়াবহ। এখন পর্যন্ত ২৬টি দেশ রোবটিক অস্ত্র তৈরির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই